যুবদল নেতা হত্যার ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রধান তিন আসামী গ্রেফতার

যুবদল নেতা হত্যার ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রধান তিন আসামী গ্রেফতার

কর্তৃক Kausar gangni

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ চাঞ্চল্যকর যুবদল নেতা মোঃ আলমগীর হোসেন(৩৮) এর হত্যার প্রধান ০৩ জন আসামীকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব-১২, সিপিসি-৩, মেহেরপুর (গাংনী ক্যাম্প)

গত ০২ জানুয়ারী ২০২৫ ইং তারিখে যুবদল নেতা আলমগীর হোসেন(৩৮) পিতা- মোঃ মঈনঊদ্দীন সাং- বাশবাড়িয়া, গাংনী, মেহেরপুরকে কে বা কাহারা জবাই করে হত্যা করে রেখে যায়। তারপর থেকে শুরু হয় র‍্যাবের গোয়েন্দা নজরদারী।

তারই অংশ হিসেবে র‌্যাব-১২, সিপিসি-৩, মেহেরপুর ক্যাম্প এর কোম্পানী কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আশরাফউল্লার নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ০২ জানুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখ বিকেল ০৩.৫০ ঘটিকার সময় মেহেরপুর জেলার গাংনী থানাধীন গাংনী থানা রোডে অবস্থিত আসামীর মালিকানাধীন সিদ্দিক ওয়াচ দোকানের সামন হতে ১। মোঃ রবিউল ইসলাম (বিপ্লব) (৩৬), পিতা- রইচ উদ্দিন, মাতা- মোছাঃ বেদেনা খাতুন, সাং-চৌগাছা, ৪নং ওয়ার্ড, গাংনী পৌরসভা, থানা- গাংনী, জেলা- মেহেরপুরকে, একই তারিখ বিকেল ০৪.৩০ ঘটিকার সময় মেহেরপুর জেলার গাংনী থানাধীন গাংনী কাচা বাজার হতে ২। মফিকুল ইসলাম(৩৯), পিতা- মোঃ আব্দুল আউয়াল, মাতা- মৃত মাবিয়া খাতুন, সাং- বাশবাড়িয়া পশ্চিমপাড়া ১নং ওয়ার্ড, গাংনী পৌরসভা, থানা- গাংনী, জেলা- মেহেরপুরকে, এবং একই তারিখ সন্ধ্যা ০৭.২০ ঘটিকার সময় মেহেরপুর জেলার গাংনী থানাধীন মটমুড়া ইউপির কোদাইলকাটি সাকিনস্থ হাওয়াভবন সংলগ্ন জনৈক মোকলেছ এর চায়ের দোকানের সামনে হতে ৩। মোঃ আলমগীর হোসেন (৪০), পিতা- মোঃ জামাত আলী, মাতা- মোছাঃ আমেনা খাতুন, সাং- কোদাইলকাটি, থানা-গাংনী, জেলা-মেহেরপুরকে প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদের জন্য আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় ভিকটিমের নিকট আসামী মোঃ মফিকুল ইসলাম(৩৯), পিতা- মোঃ আব্দুল আউয়াল, মাতা- মৃত মাবিয়া খাতুন, সাং- বাশবাড়িয়া পশ্চিমপাড়া ১নং ওয়ার্ড, গাংনী পৌরসভা, থানা- গাংনী, জেলা- মেহেরপুর ০২ লক্ষ টাকা পাওনা ছিল। প্রায় ৪ বছর আগে ভিকটিম আলমগীর মফিকুলের নিকট হতে টাকাটা ধার নিলেও তা সে পরিশোধ না করে ভিকটিম মোঃ আলমগীর হোসেন প্রায় দেড় বছর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলে যায়। আনুমানিক ০৩ মাস পূর্বে ভিকটিম দেশে ফেরত আসে। ভিকটিম বাড়িতে আসলে মোঃ মফিকুল ইসলাম একাধিকবার তার পাওনা টাকা ফেরত চাইলেও সে টাকাটা পরিশোধ না করে নানান টালবাহানা করে। বিষয়টি শুরু থেকেই আসামী মফিকুল তার বন্ধু আসামী বিপ্লবকে জানায়। আসামী বিপ্লব এবং আসামী আলমগীর একাধিকবার ভিকটিমের নিকট হতে আসামী মফিকুলের টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। গত তিন দিন আগে আসামী মফিকুলের সাথে ভিকটিমের টাকা দেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। তখন থেকেই আসামীরা ভিকটিমকে মারার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দুই দিন আগে ঘটনাকে অন্য দিকে (পরকীয়া) রুপ দেওয়ার জন্য আসামী বিপ্লবকে গাংনী বাজারের থানা রোডে অবস্থিত তার দোকানে বসে নিজ হাতে একটি চিরকুট লেখে যা ভিকটিমকে হত্যার পর লাশের নিকট রেখে আসে। ঘটনার দিন বিকালে আসামী বিপ্লবের দোকানে ভিকটিম যায় এবং তার সাথে আড্ডা দেয়। পূর্বে ভিকটিম তার বন্ধু আসামী বিপ্লবের নিকট টাকা ধার চেয়েছিল। আসামী বিপ্লব ভিকটিমকে টাকা ধার দেওয়ার কথা বলে গত ০১-০১-২০২৫ ইং তারিখ সন্ধ্যার দিকে (আনুমানিক ১৮.৪৫-১৯.১৫ টার দিকে) নিজ বাসায় নিয়ে যায়। আসামী মফিকুল তার মোটরসাইকেলে করে আসামী বিপ্লব ও ভিকটিম আলমগীরকে মড়কা বাজারে নিয়ে যায়। মড়কা বাজারে পূর্বে থেকে অবস্থানরত আসামী আলমগীর ও তার একজন সঙ্গীকে আলাদা একটি মোটরসাইকেলে করে ভিকটিমসহ মোট পাঁচজন ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে আসামীরা মফিকুলের নিকট হতে ধার নেওয়া টাকা কেন ফেরত দিচ্ছে না এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে। তখন তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আসামী আলমগীর তার শার্টের নিচে লুকিয়ে নিয়ে যাওয়া দা দিয়ে ভিকটিমের মাথায় আঘাত করে এবং সবাই মিলে ভিকটিমের মুখ ও হাত পা বাধে। আসামী বিপ্লব ও আসামী মফিকুল ভিকটিমকে ধরে রাখে এবং আসামী আলমগীর তার সঙ্গীয় অন্য আসামীসহ ভিকটিমকে দা দিয়ে জবাই করে। পরবর্তীতে তারা লাশ ফেলে রেখে আনুমানিক রাত  ০৮.৪০ মিনিট থেকে ০৯.০০ টার দিকে ঘটানাস্থল ত্যাগ করে। ফেরার পথে ঘটনাস্থল হতে আনুমানিক ৪ কিলোমিটার দূরে রাস্তার ঢালে ভিকটিমকে জবাই করার কাজে ব্যবহৃত দা টি ফেলে আসে বলে আসামী বিপ্লব স্বীকার করে। এছাড়াও তথ্য প্রযুক্তির বিশ্লেষণে ঘটনাস্থলে তাদের উপস্থিতি থাকার তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায় এবং আসামীদের দেওয়া বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আসামী ও উদ্ধারকৃত আলামত আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের নিমিত্তে মেহেরপুর জেলার গাংনী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

 

রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন