অগ্নিপথঃ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার লুৎফুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ জাকির হোসেনের নানা অনিয়ম একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
লুৎফুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯৯৯ সালের গোপাল নগর গ্রামের কৃতি সন্তান নাজমুল হুদার তত্ত্বাবধানে গোপালনগর সহ তিন গ্রামের মানুষের দান, অনুদান ও স্বেচ্ছা শ্রমের মাধ্যমে গড়ে উঠেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ২০০৬ সালের ১৭ই আগস্ট দুরারোগ্যে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তৎকালীন প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদা।
তার মৃত্যু হলে লুৎফুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটি সিন্ডিকেটের জন্ম হয় সেই সিন্ডিকেট এর কাছে মোটা অংকের লেনদেনের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পায়,তৎকালীন কাজীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হত্যা মামলার সবচেয়ে আলোচিত এজহার ভুক্ত আসামী সৈয়দ মো.জাকির হোসেন।
নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে জাকির হোসেনের সাথে যুক্ত হয় একই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. মোশারফ হোসেন এবং তাদের দুর্নীতি বেড়ে যায় দিনের পর দিন। স্বয়ং ম্যানেজিং কমিটির কাছ থেকে সাদা কাগজের স্বাক্ষর করে নেয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আছে একাধিক। তিনি নিয়োগ বাণিজ্যসহ গাছ কেটে বিক্রয় করা, পুরাতন ভবন এবং পুরাতন ভবনের মালামাল ট্রেন্ডার না নিয়ে বিক্রি করা সহ নানান স্বেচ্ছাচারিতায় লিপ্ত হয় এই চক্র।
গাংনী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহিদুজ্জামান খোকনের সহযোগিতায় লুৎফুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে নিয়োগ পায় গাংনী বাজারের ফার্মেসি ব্যবসায়ী নাসিলা ড্রাগ হাউজের স্বত্বাধিকারী মোঃ শহিদুল ইসলাম। তিনি সভাপতি হওয়ার পর চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে তিনজনকে ৩৬ লক্ষ্য টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন সাবেক ম্যানেজিং কমিটির একজন সদস্য।
সম্প্রতি ২০২৪ সালের পুরাতন ভবন বিক্রয়ের টেন্ডার এর তারিখ সংশ্লিষ্ট অফিসকে না জানিয়ে, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিজেরাই একটি রেজুলেশন তৈরি করে। এবং সেখানে ৭ ই মে ২০২৪ তারিখে পুরাতন ভবনের টেন্ডারের খোলা ডাকের কথা উল্লেখ্য থাকলেও প্রধান শিক্ষক বলে আমি নিজ ক্ষমতা বলে ৭ তারিখের পরিবর্তে ৫ তারিখে টেন্ডার করবো।কি কারনে দুই দিন আগে টেন্ডার করা হবে জানতে চাইলে তিনি নাদে মোবাইল ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে সেটা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের হস্তক্ষেপে টেন্ডার বন্ধ করা হয়। এবং এবং পরবর্তীতে তা কোন টেন্ডার নোটিশ না করেই নিজে কোন একজন জনৈক ব্যক্তির নাম দেখিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন নিজেই টেন্ডার নেন বলে যানা গেছে।
এ ব্যাপারে সত্যতা জানতে বিস্তারিত তথ্যের জন্য তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ এর নির্ধারিত ফরমে ঐ এলাকার স্থানীয় ব্যক্তির ডাক বিভাগের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করে প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনকে একটি চিঠি দেন। চিঠি পাওয়ার পরেও অদ্যবধি কোনো তথ্য দেননি। তথ্য না পেয়ে ঐ নাগরিক নিয়ম অনুযায়ী তথ্য কমিশন বরাবর আপিল করবে বলে জানা জানা যায়।
আরও একটি মাধ্যমে জানা যায়, মোশারফ হোসেন সহকারী শিক্ষক থাকা কালে কোন রকম রিজাইন না দিয়েই প্রচলিত আইনকে অমান্য করেই, সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে আবার নিয়োগ নেন একই প্রতিষ্ঠানে।
এ ব্যাপারে লুৎফুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে, তিনি জানান এখন কিছু বলা যাবে না আমি আগে কাগজ পত্র দেখব তারপর কথা হবে বলে মোবাইল কেটে দেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষক মোশারফ হোসেন এর সাথে কথা বললে তিনি জানান আমি এখন কোন তথ্য দিতে পারব না বলে মোবাইল কেটে দেন।
গাংনী বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, তারা এ ব্যাপারে কোন চিঠি পায়নি। তিনি আরও জানান, গাছের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণে তাদের লুৎফুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক এর পক্ষ কিছুই জানানো হয়নি।
গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোবারক হোসেনের সাথে কথা বলা হলে তিনি গাছ কাটার ব্যাপারে সত্যতা শিকার করে বলেন, আমরা তাদের শোকজ করেছি চলমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই আমরা আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করব।