অগ্নিপথঃ চিৎলা ভিত্তি পাট বীজ খামারের যুগ্ম পরিচালক মুর্শেদুল ইসলামের অবহেলা ও খামখেয়ালিপনার কারনে খামারের অভ্যন্তরে কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। ইতো মধ্যে এসব যন্ত্রপাতির কোটি টাকা মূল্যের অধিকাংশ পার্টস গোপনে বিক্রি করেও পকেটস্থ করেছে যুগ্ম পরিচালক।এছাড়াও বর্তমানে বাহির থেকে অন্য ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করছেন।প্রতি মৌসুমে খামারে শ্রমিকের ভূঁয়া মাস্টার রোল দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করছেন।নামে এটি পাট বীজ খামার হলেও নেই পাট চাষ। বর্তমানে খামারের বেশির ভাগ জমি পতিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
যুগ্ম পরিচালক মুর্শেদুল ইসলাম খামারে যোগদান করার পর থেকে দূর্ণীতি অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে বিভিন্ন ফসলের অবীজ বিক্রি করা হয়েছে।যেখান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুঁষের টাকা পকেটস্থ করেছেন তিনি। খামারে জ্বালানি খাতে রয়েছে পুকুর চুরির ঘটনা।খামারের জমি চাষ, ফসল পরিবহন, কর্মকর্তাদের গাড়ি ব্যবহারের জন্য বিএডিসি’র বরাদ্দ করা জালানি তেল ব্যবহার না করে সিংহভাগই এ কর্মকর্তা পকেটস্থ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
খামারের অভ্যন্তরে ফলজ বাগান আম, লিচু, কাঠাঁল, নারিকেলের প্রায় ৫ শতাধিক গাছের ফল দরপত্রের মাধ্যমে কিছু বিক্রি করে থাকেন। আর বাকী ফল বিক্রি না করে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেন। ফলে এ খাত থেকে সরকার প্রতি বছর মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে।
একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, চারা উঠানো, ধান রোপন, জমির আইলের গলা কাটা ও লাইন করে চারা রোপনের সময় দড়ি ধরার জন্য একর প্রতি বিএডিসি’র শ্রমিক বরাদ্দ ২৪ জন থাকলেও সেখানে ১৬ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হয়ে থাকে।একর প্রতি বাকী ৮ জন শ্রমিকের ভূঁয়া বিল ভাউচার করে অর্থ তুলে নেন এ কর্মকর্তা।প্রতি মৌসুমে খামারে শ্রমিকের ভূঁয়া মাস্টার রোল দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করছেন মুর্শেদুল ইসলাম।
ইতোমধ্যে ফার্মের পুরানো হার্ভেষ্টার, ট্রাক, ট্রাক্টার, জীপসহ অন্যান্য গাড়ির ভিতরের পার্টস গোপনে বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন গাড়ি চালক জানান, খামারে ব্যবহৃত চলমান গাড়ি গুলিতে নিদির্ষ্ট সময়ে মোবিল দেওয়ার কথা থাকলেও অব্যবহার যোগ্য মোবিল দিয়ে গাড়ি চালানোর ফলে ইঞ্জিনগুলো দিন দিন নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই কোটি টাকা মূল্যের সরকারী গাড়ি নষ্ট হবে বলে জানান তারা।
একটি সূত্র জানায়, মুর্শেদুল ইসলাম কৌশলে তার নিজ এলাকা থেকে নাজিম উদ্দনি জামান নামের একজনকে খামারে অঘোষিত জেডি নিযোগ দিয়েছেন। তার মাধ্যমে খামারে বিভিন্ন অনিয়ম শুরু করে তার মাধ্যমে ভুয়া লেবারের তালিকা তৈরী করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন।সম্প্রতি খামারের ভিতরে টেন্ডার ছাড়াই তিনটি সেগুনের গাছ কেটে বিক্রয় করেছেন।
জানা গেছে, যুগ্ম পরিচালকের জন্য সরকার মাসিক ১৫ হাজার টাকা বাসা ভাড়া দিলেও সে ভাড়া বাসায় না থেকে অবৈধভাবে খামারের অতিথি ভবন (রেষ্ট হাউজ) ব্যবহার করে আসছেন।অতিথি ভবন নিজের বাসা হিসেবে ব্যবহার করলে তাকে প্রতি মাসে সরকারের নির্দিষ্ট ভাড়া পরিশোধ করার কথা থাকলেও কোন টাকা জমা দেওয়া হয়নি।
ফলে সরকারকে প্রায় লক্ষাধিক টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। এছাড়া বিনা কারনে সরকারকে বাবুচি পাহারাদার খামারের মরা গাছ জ্বালানী হিসাবে বিদ্যুৎ ও এসি বিল বাবদ গুনতে হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
যোগদানের পর থেকে খামারের অভ্যন্তরের পুরানো দামী দামী গাছ গুলো কেটে জালানি কাঠ হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন।এছাড়া বেশ কয়েকটি মোটা গাছ বিনা টেন্ডারে বিক্রি করে দিয়েছেন। গাছ বিক্রির টাকা সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়ে পকেটস্থ করেছেন তিনি।মুর্শেদুল ইসলাম সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে চুয়াডাঙ্গায় তার শুশুর বাড়ীতে গরুর ফার্ম দিয়েছেন।
এই অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদে খামার এলাকার চিৎলা, যুগিন্দা, পাকুড়িয়া আযান,বাগুন্দা নিত্যানন্দপুর, বাঁশ বাড়িয়া গ্রামের হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতা কর্মী সচেতন মহল যুগ্ম পরিচালকের বিরুদ্ধে মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। এই সমাবেশ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন,জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন,গাংনী উপজেলা কৃষক লীগের সাধারন সম্পাদক মশিউর রহমান পলাশসহ অনেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এব্যাপারে যুগ্ম পরিচালক মুর্শেদুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন,গাছ বিক্রয়ের কথা স্বীকার করে বলেন,আমার শুশুর বাড়ীতে গরুর ফার্ম রয়েছে।আমার নিজের টাকা দিয়ে খামার করেছি । আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো তথ্য দেবো না, এই বলে তিনি মোবাইল ফোন কেটে দেন।