অগ্নিপথঃ মাছে-ভাতে বাঙালি’ কথাটি বেশ পুরাতন তবে আজ কথাটি অর্থহীন। কিছুকাল আগেও বাংলাদেশের নদী-নালা, খাল-বিল ও বিভিন্ন জলাশয়ে বিপুল পরিমাণ দেশিও মাছ পাওয়া যেত,যা অত্যন্ত পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
খাল-বিল,নদী- নালার দেশীয় মাছ যেমন খেতে সুস্বাদু তেমনি মানবদেহে প্রোটিন, সোডিয়াম, মিনারেলস ও ভিটামিন ডি সহ বিশেষ চাহিদা পূরণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। বর্তমানে বিভিন্ন পুকুরে বিলুপ্ত হওয়া প্রায় ৩০জাতের মাছ চাষ করা হলেও তাতে দেওয়া হয় বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক কেমিক্যাল যুক্ত খাবার। যা আমাদের শরিরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
এ ব্যাপারে মৎস্যচাষী গাংনী উপজেলার শিমুলতলা গ্রামের মনিরুল ইসলামের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, খাল-বিল, নদী-নালা খনন করা হয়নাই এবং এ গুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়না।ফলে বর্ষাকালে বাহির থেকে পানিতে ভেসে আসা মাটি দ্বারা ঐগুলো ভরাট হয়ে গেছে। এছাড়া,খনন না করা ও অনাবৃষ্টির কারণে নদীতে ঠিকমতো পানি থাকে না তাই নদী খনন করা অত্যন্ত প্রয়োজন। দেখা যায়,কৃষকেরা নদী-নালা,খাল-বিলের উপকূলে চাষাবাদ করে থাকে।এতে বর্ষাকালে মাটি ধ্বংসে এগুলো ভরাট হয়ে যায়।এছাড়া কৃষিতে কীটনাশক ব্যবহার করার কারনে নীচু জমিতে থাকা দেশী প্রজাতির মাছ মরে যায় এবং বৃষ্টি ও বন্যায় ভেসে আসা বিষাক্ত পানির কারনে দেশী প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে।আমরা আরও জেনেছি যে, কিছু অসাধু মৎস্য শিকারী নিষিদ্ধ চায়না জাল, কারেন্ট জাল দিয়ে ছোট মাছ শিকার করে থাকে এবং শুকনো মৌসুমে খাল-বিল, নদী-নালাতে অল্প পানি থাকে,এসময়ে বাধ দিয়ে পানি ছেকে মাছের রেনু সহ সব ধরনের মাছ শিকার করে, তাই বিলুপ্তের পথে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ।
ছেউটিয়া নদী পাড়ের অন্য এক বাসিন্দা ও স্থানীয় রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রাজু আহমেদ জানান, বর্তমানে নদী অপরিষ্কার প্রচুর কচুরিপানায় ভরপুর থাকে, চাষিরা পাট জাগ দেয়াতে পানি পচে যায়, এবং নদীর নাব্যতা কমে গেছে। তাই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সকল প্রকার মাছ।
এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।